খুঁজুন
শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

জাবিতে মধ্যরাতেও উচ্চস্বরে গান, বন্ধ করতে বলায় প্রক্টরকে গালি প্রদান

আলামিন খান (জাবি প্রতিনিধি)
প্রকাশিত: সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:২৯ অপরাহ্ণ
জাবিতে মধ্যরাতেও উচ্চস্বরে গান, বন্ধ করতে বলায় প্রক্টরকে গালি প্রদান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের গ্রেফতার ও দেশজুড়ে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ‘বাউলের দ্রোহ’ শীর্ষক গানের আসর আয়োজন করেন একদল শিক্ষার্থী। রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল পাঁচটা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বরে অনুষ্ঠান চলে।

এদিকে, গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে গান বাজানোয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দীক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানমি শাহারিন বলেন, কেমন প্রশাসন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে , তা স্পষ্ট।সন্ধ্যা থেকে উচ্চ শব্দ, পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে এমন হয় জানিনা। ঘুমানোর জন্য দেড়ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারছিনা।এত সাউন্ড।এই প্রশাসনের কী কিছুই আসে যায় না? শিক্ষার্থী দের কষ্ট কী তাদের কাছে কিছুই না? আর যারা এভাবে গান বাজাচ্ছেন,তারা মূলত কারা?তাদের কী কোনো সভ্যতা নেই?

আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, রাত ২টা পর্যন্ত এমন শব্দ সহ্য করা সম্ভব নয়। সাংস্কৃতিক চর্চা ভালো ব্যাপার, কিন্তু সেটা যদি অন্যের বিশ্রাম কেড়ে নেয় তাহলে সেটি সংস্কৃতি নয় বরং বিপর্যয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়োজকদের উচ্চস্বরের গান বন্ধ করতে অনুরোধ করে বলেন, এটা আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। অনেকের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করে এভাবে গান বাজানো উচিত নয়।

প্রক্টরের এ অনুরোধে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু আয়োজক তাঁর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়ান প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য ও এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রক্টরের সামনে ৫১তম ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সজিব আহমেদ জেনিচকে গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এর আগেও বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গালাগালি করার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম গনমাধ্যমকে বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শব্দ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছে। কারণ, তাদের পরীক্ষা চলছে, এখন পরীক্ষার মৌসুম। অনেক শিক্ষার্থী গানের উচ্চ শব্দে মাইগ্রেনের সমস্যার কথাও জানিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজকদের শব্দ কমাতে বলেছিলাম। পরে রাত পৌনে দুইটার দিকে অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য অনুরোধ করলে তারা ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় চায় এবং সে সময়ের পর আমার অনুরোধে অনুষ্ঠান শেষ করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে এবং বাজে শব্দ ব্যবহার করেছে।

অন্যদিকে, রাত ১টার দিকে পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দ বন্ধ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গান চালাবেন বলে ঘোষণা দেন। পরে সোয়া একটার দিকে তাঁরা হ্যান্ডমাইক ও ছোট সাউন্ডবক্স নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গান বাজাতে থাকেন।

তাজউদ্দীন আহমদ হল সংসদের ভিপি সিফাতউল্লাহ সিফাত বলেন, রাত ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। গানের উচ্চ শব্দে তাঁরা পড়তে পারছেন না, তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আয়োজকেরা সেসব মান্য করেননি এবং প্রশাসনেরও টনক নড়েনি। প্রশাসন যখন কোনো উদ্যোগ নেয়নি, আমরা ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদস্বরূপ গান বাজিয়েছি।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গান বাজানো প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরেকদল শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয় এবং তারাও তুলনামূলক উচ্চস্বরে কিছু কার্যক্রমে অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণও কাম্য নয়।

এর আগে ১৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ১০টার পর যে কোনো প্রকার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও অনুষ্ঠান চলমান থাকলে আয়োজকদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি/রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাত ১০টার পর এমন আয়োজন চলতে থাকায় শিক্ষার্থীদের ঘুম ও পড়াশোনার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্দেশনা অমান্য করে ‘বাউল দ্রোহ’ নামের অনুষ্ঠানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে সাউন্ড ব্যবহার করা হয়। এতে আবাসিক হল গুলোতে থাকা শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

ফেসবুক গ্রুপ ‘জাবির সকল সংবাদ’ এ বিভিন্ন শিক্ষার্থী তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। এক শিক্ষার্থী লিখেন,পরীক্ষার পড়া নিয়ে বসেছি, কিন্তু সাউন্ডের কারণে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। নিয়ম করে কী লাভ, যদি প্রয়োগ না হয়?

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল গালিব লেখেন, যতদুর জানি আজকের বাউল সন্ধ্যা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও উচ্চশব্দে পুরো সময় কনসার্ট চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে এখনো। আমাদের হল থেকেই টিকতে পারছিনা। অথচ পাশের লেকেই অতিথি পাখির আবাস।

তিনি আরও বলেন, প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে নিয়মিত চিল্লানো হিপোক্রেটরাই নিজেদের প্রোগ্রামের বেলায় প্রকৃতির কথা ভুলে গেছে। প্রাণিবিদ্যার শিক্ষার্থী হিসেবে এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নিয়মের তোয়াক্কা না করে এমন প্রোগ্রামে জাকসু নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন ও সাংবাদিকরা নিরব কেন? ফাইনাল পরীক্ষার সময় নিয়মবহির্ভূত এমন প্রোগ্রাম চলতে থাকলে জাকসুর দরকার টা কি?

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৫১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারিহা তাবাসসুম মাওয়া বলেন, আপনারা প্রোগ্রাম করতেছেন ভালো কথা কিন্তু পুরো ক্যাম্পাস কাঁপাইতেছেন কেন?ঢাকা – আরিচা মহাসড়কের কারণে মেয়েদের হলে রাতে টিকা যায় না। তার উপর এসব প্রোগ্রামের সাউন্ড। ম্যাক্সিমাম ডিপার্ট্মেন্টের এখন ফাইনাল চলে। পরীক্ষা দিয়ে এসে আপনাদের সাউন্ডের অত্যাচারে ঘুমাতেও পারিনা। সাউন্ড সন্ত্রাস থেকে আমাদের মুক্তি দিন প্লিজ।

জাবিতে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নতুন নেতৃত্বে রিয়াদ-তানবীর

আলামিন খান (জাবি প্রতিনিধি)
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ণ
জাবিতে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নতুন নেতৃত্বে রিয়াদ-তানবীর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যয়নরত চট্টগ্রাম জেলার শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ৪৯ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাজিম রিয়াদ এবং সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন একই ব্যাচের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর মাহতাব চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান এ কমিটি ঘোষণা করেন। নতুন কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

জেলা সমিতির কার্যক্রম ও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে নবনির্বাচিত সভাপতি শাহরিয়ার নাজিম রিয়াদ বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রাম থেকে আগত শিক্ষার্থী ও ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এই সংগঠনের কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করে আমরা আরও নতুনত্বের প্রকাশ ঘটাবো। আগামী দিনে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা, চট্টগ্রামের মেধাবী ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের ক্যাম্পাসের সম্পর্ক জোরদার করা—এগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাব।

 

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক তানভীর মাহতাব চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ আমার জন্য এক বিশেষ সম্মান। আপনাদের বিশ্বাস ও ভালোবাসাকে শক্তি হিসেবে নিয়ে আমরা সমিতিকে আরও সংগঠিত, কার্যকর ও শিক্ষার্থীবান্ধব একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলব।

তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্য, দায়িত্ববোধ ও ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছি। ইনশাআল্লাহ, আপনাদের সহযোগিতায় আমরা সফল হবো।’

শুধুমাত্র আবেদন করলেই যেতে পারবেন ইউরোপের যে দেশে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ
শুধুমাত্র আবেদন করলেই যেতে পারবেন ইউরোপের যে দেশে

শুধুমাত্র আবেদন করলেই ইউরোপের যেসব দেশে যাওয়া সম্ভব—এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি চাকরি–প্রত্যাশী ও দক্ষ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ শ্রমবাজার শূন্যতা পূরণে এশিয়ার দেশগুলো থেকে কর্মী নিচ্ছে, যার কারণে অভিবাসন প্রক্রিয়াও আগের তুলনায় সহজ হয়েছে। অনেক দেশে এখন আর জটিল ইন্টারভিউ বা দীর্ঘ যাচাই–বাছাই নেই; সাধারণ আবেদন করলেই সুযোগ মিলছে ভিসার, যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও যোগ্যতা ঠিক থাকে। এই প্রবন্ধে ইউরোপের সেই দেশগুলো, ভিসার ধরন, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং আবেদন প্রক্রিয়ার মূল দিকগুলো সহজভাবে তুলে ধরা হলো।

ইউরোপের যেসব দেশে শুধুমাত্র আবেদন করলেই যেতে পারেন, তার মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে ‘ডিক্রেটো ফ্লুসি’ কোটা অনুযায়ী প্রতিবছর কয়েক লাখ বিদেশি কর্মী নেওয়া হয়। কৃষি, নির্মাণ, হোটেল–রেস্টুরেন্ট, পরিচ্ছন্নতা, ড্রাইভিং, কেয়ারগিভারসহ বিভিন্ন সেক্টরে লক্ষাধিক কর্মীর প্রয়োজন হয়। আবেদনকারীর শুধু নিয়োগদাতার কনট্রাক্ট লেটার, পাসপোর্ট এবং জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয় নথি থাকলেই ভিসা পাওয়ার সুযোগ থাকে। ইতালির ভালো দিক হলো আবেদন করা সহজ, আর অনুমোদন পেলে সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায়। স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগও অনেক বেশি।

অন্যদিকে পর্তুগাল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশিসহ এশীয় কর্মীদের গ্রহণ করে আসছে। দেশটির “জব সার্চ ভিসা” বা শ্রমিক–সংগ্রহ ভিসা এখন তুলনামূলক সহজ প্রক্রিয়ায় পাওয়া যায়। আবেদনকারীরা আগে থেকেই চাকরি না পেলেও আবেদন করে ভিসা নিয়ে গিয়ে পর্তুগালে কাজ খুঁজে নিতে পারেন। কাগজপত্র সঠিক হলে এবং আর্থিক প্রমাণপত্র থাকলে পর্তুগালের ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ। এছাড়া দেশটিতে বসবাস করলে নির্দিষ্ট সময় পর পরিবার নিয়ে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

রোমানিয়া বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুত কর্মী নিচ্ছে এমন ইউরোপীয় দেশগুলোর একটি। নির্মাণ, ফ্যাক্টরি, ওয়্যারহাউস, ওয়েল্ডিং, মেশিন অপারেটর, হোটেলসহ বিভিন্ন বিভাগে প্রচুর শ্রমশক্তি প্রয়োজন। এদেশে আবেদন করার প্রক্রিয়াও খুব জটিল নয়—নিয়োগদাতার ওয়ার্ক পারমিট থাকলেই দূতাবাসে আবেদন করা যায় এবং অনুমোদন দ্রুত পাওয়া যায়। অনেকের ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ ছাড়াই ভিসা অনুমোদন হয়ে থাকে। কর্মীদের জন্য রোমানিয়া এখন আকর্ষণীয় কারণ চাকরির সুযোগ বেশি, আর ইউরোপের অন্যান্য দেশে ভবিষ্যতে যাওয়ার পথও সহজ হয়।

পোল্যান্ড এশীয় শ্রমিকদের জন্য বহু বছর ধরেই জনপ্রিয় একটি দেশ। কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি, ড্রাইভিং ও লজিস্টিকস সেক্টরে হাজার হাজার কর্মী নেওয়া হয় বছরে। পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট প্রক্রিয়া তুলনামূলক সরল এবং একবার নিয়োগকর্তার কাগজ আসলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পোল্যান্ডে কাজ করলে পরবর্তীতে আরও ইউরোপীয় দেশে কাজের সুযোগ তৈরি হয়, বিশেষ করে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাঙ্গেরি–ও বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দরজা খুলেছে। ফ্যাক্টরি কর্মী, ওয়্যারহাউস অ্যাসিস্ট্যান্ট, প্যাকেজিং ও ইলেকট্রনিকস সেক্টরে প্রচুর নিয়োগ হচ্ছে। প্রয়োজন শুধু নিয়োগপত্র, পাসপোর্ট এবং ভেরিফাইড কাগজপত্র—ইন্টারভিউ বা বিশেষ টেস্টও অনেক ক্ষেত্রে লাগে না। হাঙ্গেরির ভিসা প্রসেস দ্রুত হওয়ায় এটি চাকরি–প্রত্যাশীদের কাছে নতুন গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এছাড়া ক্রোয়েশিয়া, স্লোভাকিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও মাল্টা—এই দেশগুলোতেও প্রচুর দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ক্রোয়েশিয়ার হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সি–ফুড প্রসেসিং ও পরিবহন খাতে ব্যাপক জনবলের প্রয়োজন হয়। মাল্টা আইটি, হসপিটালিটি ও নির্মাণ খাতে সহজ আবেদন প্রক্রিয়ায় কর্মীর ভিসা দেয়। লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় কারখানা কর্মী ও ট্রাক–ড্রাইভারদের জন্য দ্রুত ভিসা অনুমোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

যে দেশে যেতেই চান, কিছু সাধারণ বিষয় মনে রাখা জরুরি। প্রথমত—সবসময় বৈধ উপায়ে আবেদন করতে হবে, কারণ ইউরোপের দেশগুলো এখন ভিসা যাচাইয়ে অনেক কঠোর। দ্বিতীয়ত—নিয়োগদাতার কাগজপত্র অবশ্যই সত্য ও যাচাই–যোগ্য হতে হবে। ভুয়া চুক্তিপত্রে ভিসা পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তৃতীয়ত—পাসপোর্ট, পেশাগত দক্ষতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ সব নথি সঠিক হলে আবেদন দ্রুত গ্রহণ করা হয়। সবচেয়ে ভালো হয় এজেন্সি বা দালালের ওপর না ভরসা করে নিজে যাচাই করে আবেদন করার মাধ্যমে।

ইউরোপে কাজের সুযোগ বাড়ছে, সেটা সত্যি; তবে একই সঙ্গে প্রতিযোগিতাও বাড়ছে। তাই যারা ইউরোপের যেকোনো দেশে শুধু আবেদন করেই যেতে চান, তাদের উচিত সঠিক তথ্য জেনে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে এগোনো। ইতালি, পর্তুগাল, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়ার মতো দেশগুলো বাংলাদেশিদের জন্য সুযোগের দরজা খুলে দিয়েছে—এখন শুধু যোগ্যতা, প্রস্তুতি এবং সঠিক আবেদনই আপনাকে সেই পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এভাবে প্রস্তুত থাকলে ইউরোপে কাজের স্বপ্ন আর দূরে থাকবে না, বরং একটি বৈধ আবেদনই হয়ে উঠবে নতুন জীবনের শুরু।

কাতার নয়, খালেদা জিয়ার জন্য বিমান আসছে যে দেশ থেকে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৪৬ অপরাহ্ণ
কাতার নয়, খালেদা জিয়ার জন্য বিমান আসছে যে দেশ থেকে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। প্রথমে জানানো হয়েছিল, তাঁর লন্ডন যাত্রার উদ্দেশ্যে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় আসবে, সেটি কাতার থেকে পাঠানো হবে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়। তবে শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। কাতার থেকে পাঠানোর কথা থাকা বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটটি যান্ত্রিক সমস্যার কারণে নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। ফলে খালেদা জিয়ার দেশত্যাগের পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায় এবং নতুন ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু হয়।

সর্বশেষ নিশ্চিত তথ্যে জানা গেছে, কাতার নয়—খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসবে জার্মানি থেকে। ইউরোপভিত্তিক একটি বিশেষায়িত প্রাইভেট কোম্পানি এই চিকিৎসাবাহী অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনা করবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফ্লাইং পারমিট এবং মেডিকেল টিম নিশ্চিত করার পর নতুন ফ্লাইটটির ঢাকায় অবতরণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় পৌঁছালে প্রয়োজনীয় মেডিকেল মূল্যায়ন সম্পন্ন করে খালেদা জিয়াকে সরাসরি লন্ডনে নেওয়া হবে, যেখানে তাঁর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার আরও ব্যবস্থা প্রস্তুত।

এর আগে শুক্রবার রাতে তাঁর লন্ডন যাওয়ার কথা থাকলেও কাতারি অ্যাম্বুলেন্স বিলম্ব হওয়ায় যাত্রা পেছাতে হয়। পরিবারের সদস্য ও বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি চিকিৎসা টিমও নতুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সময়সূচি অনুযায়ী প্রস্তুত রয়েছে। আপাতত লক্ষ্য—যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদভাবে তাঁকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার আওতায় নেওয়া।

এখন নজর রয়েছে জার্মানি থেকে আসা নতুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে, যা পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার সিদ্ধান্ত পুনরায় কার্যকর হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে যাত্রা বিলম্বের আর কোনো কারণ থাকবে না।

ব্রেকিং নিউজ