নারী প্রার্থী ছাড়াই নির্বাচন করবে জামায়াতে ইসলাম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন প্রতিটি দল ও জোট তাদের প্রার্থী তালিকা নিয়ে ব্যস্ত। জনশক্তি, রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ভোট প্রাপ্তির কৌশল নিয়েই প্রায় সব দল আলোচনা করছে। তাজা খবর হলো — জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন সমমনা ৮টি দলের জোটে কোনো নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি, যা নির্বাচনী পরিবেশে একটি বড় সমাজ-রাজনৈতিক প্রশ্ন হিসেবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

বর্তমানে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ অন্যান্য সহযোগী দল তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করেছে। অন্যদিকে বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৭৩টি আসনের জন্য আংশিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে নারী প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ১১।

তালিকার বিপরীতে জামায়াত-নেতৃত্বাধীন ৮ দল এখন পর্যন্ত একটিও নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি, ফলে তাদের নারী প্রতিনিধিত্ব শূন্য। এই বাস্তবতা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ইসলামি দলগুলোর আদর্শিক অবস্থান, সাংগঠনিক কাঠামো ও নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণে ঐতিহ্যগতভাবে নীচু প্রবণতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।

জমায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম কালবেলা বলেছেন, নারীদের প্রার্থী করার বিষয়ে জোটের অভ্যন্তরে আলোচনা চলছে এবং তারা বিষয়টি বিবেচনায় রাখছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে অনেক নারী কর্মী নিজে নির্বাচনে আগ্রহী নন এবং জোটের কিছু নিয়ম ও চিন্তাধারা এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী মন্তব্য করেন, নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে, যেখানে বিএনপি কমপক্ষে ৫% নারী প্রার্থী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল; বাস্তবে তা ৩% হয়েছে। ৮-দলীয় জোটে নারী প্রার্থীর অনুপস্থিতি তাদের রক্ষণশীল রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির একটি দিক প্রতিফলিত করে।

অন্য একজন বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক বলেন, ঐতিহ্যগত কারণে ইসলামী দলগুলোতে নারীর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ কম দেখা যায়, যা এই জোটেও একই রকম প্রতিফলিত হয়েছে। নারীর সামাজিক ভুমিকা ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিয়ে সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতাগুলো এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ও সমাজকল্যাণ সংগঠনগুলো মনে করিয়ে দিচ্ছে, যে প্রতিটি নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো দেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য জরুরি। ক্ষমতায়ীদের কাছেও বারবার দাবি এসেছে — নারীরা ভোটার হিসেবে যেমন সমান অধিকার রাখেন, তেমনি তারা নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বেও জায়গা পেতে পারেন। কিন্তু জামায়াত-নেতৃত্বাধীন এই জোটে সেই সুযোগ স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়নি।

প্রিন্ট করুন